কদিন আগে এক বান্ধবীর সাথে অনেকটা ঝোঁকের মাথায়ই ট্যারোট কার্ড রিডারের
কাছে গিয়েছিলাম। আমার ধারণা ছিলো ট্যারোট কার্ড রিডার মাথায় পাগড়ী , হাতে ক্রিষ্টাল বল নিয়ে আলো আঁধারির মাঝে বসে থাকবে। গিয়ে দেখলাম তেমন কিছুই না। দুই সন্তানের মা , এক পার্শিয়ান মহিলা। আমি আমার ভূত , ভবিষ্যত, বর্তমান জানতে কয়েকটা কার্ড তুলে তার হাতে দিলাম।
সে আমার সম্পর্কে কিছু সাধারণ কথা বলল। যা কি না আমার বাদামী রঙ দেখেই বলা সম্ভব। মহিলার পর্যবেক্ষণ শক্তি তেমন একটা ভালো না। আমার হাতে আংটি খেয়াল না করেই আমার কপালে বিয়ে নাই জাতীয় কথা -বার্তা বলা শুরু করলো। আমিও তাল মেলালাম।
তবে কয়েকটা কথা ঠিক ও বলতে পেরেছে দেখে কিছুটা অবাক হলাম। আমি খুব আগ্রহ নিয়ে মহিলার ভবিষ্যতবাণী ঠিক কীনা জানার জন্য অপেক্ষা করছি।
মে মাসের শেষ দিকে এসে আমার বুড়ো গাড়িটা বিনা নটিশে্ বিগড়ে বসলো ! ভাবখানা এমন...
"মকা পাইসো ? আমি দিন রাত তোমাকে নিয়ে চরকি ঘুরবো আর তুমি দিনে দিনে হাতি থেকে হিপো্ হবে? যাও বাবা ঘুরতে হয় তো নিজের পায়ে হেটেঁ চল।"
প্রথমে আমার মাথায় হাত গাড়ি ছাড়া কিভাবে চলবো? তাও আবার এই চান্দি ফাটা গরমে। প্রথমে দু'দিন বাসা থেকে কাজ করলাম। সপ্তাহান্তে গাড়ি সারাই এর দোকানে নিয়ে গেলাম। মিস্ত্রী আমার সাথে মিষ্টি মুখে নানা গল্প করে একটা বিশাল ফর্দো ধরায় দিল। কী কী ঠিক করতে হবে আর কেমন খরচ পড়বে।
গাড়ি নষ্ট হয়াতে মাথায় হার দিয়েছিলাম। আর ফর্দো দেখে মাথার চুল সব ছিড়ে ফেলতে ইচ্ছা করছিলো। নেহাত ই টাক মাথা বউ এর সাথে ঘর না করার হুমকিতে অতি কষ্টে সে ইচ্ছা চেপে গেলাম।
সব ভেবে চিন্তে ঠিক করলাম আর সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি না এবার ব্রান্ড নিউ লাল টুকটুকে একটা গাড়ি কিনবো। আমার বহুদেনের ইচ্ছা ট্রাক কিনা। টেক্সাসে থেকে ট্রাক না চালালেই নয়। আর ট্রাক এ চরলে নিজেকে রাস্তার রাজা মনে হয়। এর মাঝে অফিস ট্যুরে টেক্সাসের পশ্চিম প্রান্ত (wild wild west) ঘুরে আসলাম ট্রাকে করে। মরুভূমির মাঝে, কেবল নুড়ি বিছানো রাস্তায় ট্রাক চড়লে মনে হয় আকাশের মাঝে পাখির মত উড়ে চলেছি। ইয়ামীনকে বলতেই প্রথমেই ভেটো দিয়ে দিলো। শেষে আমার জোড়াজুড়ীতে বললো - "তোমার বেশী ইচ্ছা হলে কিনো"
যাই হোক সব দিক চিন্তা করে শেষ পর্যন্ত একটা এস.ইউ.ভি (suv) কিনলাম, নীল রঙের।
প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ দীর্ঘ দিন ক্যন্সারে ভুগে চলে গেলেন চির শান্তির দেশে। আমার শৈশব কৈশোরের অসাধারণ কিছু সময় কেটেছে তারঁ বই পড়ে। আর কখনো হিমু, মিসির আলী, শুভ্রের নতুন বই পড়া হবে না ভেবে খুবই খারাপ লাগছিলো।
Comments
Post a Comment