পরীক্ষার পূর্বসপ্তাহ
"ঘুম পরীক্ষার দূরত্বের বর্গের ব্যাস্তানুপাতিক " রানা স্যারের এই অমোঘ সূত্র আমার জীবনের ধ্রুব সূত্র। পরীক্ষা সামনে এলেই ঘুমের পরিমাণ বাড়তে থাকে। বই খুললেই চোখ বন্ধ হয়ে আসে। আর টিভি খুললেই ঘুম চলে যায়। সব কিছুই ভালো লাগে। জাজ শো, ভুয়া ডকুমেন্টারি , বহুবার দেখা মুভি সবই। ঘন্টা খানেক পড়লেই মনে হয়, হাতে পায়ে জং ধরে যাচ্ছে, যাই একটু দৌড়ে আসি। গ্রীষ্মের এই রোদেও খারাপ লাগে না।
এ বছর পরিবেশ বাচাঁতে কোন কিছুই প্রিন্ট করিনি। সব নোটস, রিভিউ পিডিএফে পড়ি আর একটু পরপর ফেসবুক, ইউটিউব, গুগোল রিডার গুঁতাই; ঘন্টার পর ঘন্টা অনলাইনে বসে থাকি। ইমেইলের রিপ্লাই দিতে ত্বর সয় না। মাঝে কিছুদিন ফেসবুক থেকে দূরে ছিলাম। অনেক কিছুই নতুন ঠেকছে। সবচেয়ে ভয়ানক জিনিসটা হল সাইবার বুলিং। কোন প্রকার উস্কানি ছাড়াই অচেনা লোকজন অফেন্সিভ মেসেজ করে।
পরীক্ষা শেষেই অবস্থা পুরা ১৮০ ডিগ্রী ভিন্ন। টিভিতে দেখার কিছুই পাইনা। ফেসবুক বিরক্ত লাগে। দৌড়াতে আলস্য লাগে। গান শুনলেও মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। কিছুই ভালো লাগে না।
বৈশাখি মেলায় গিয়ে বুঝলাম ধাক্কা কি কি ও কত প্রকার। যেদিকে যাই সেখানেই ধাক্কা খাই। ছেলে, বুড়ো, নারী পুরুষ নির্বিবিষে কেবলই ধাক্কা খাই। অবশ্য বাঙ্গালী জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হল ধাক্কা। আমার দেখা শতকরা ৯০% সিনেমায় নায়ক নায়িকার প্রথম মোলাকাত ধাক্কার মাধ্যমে। ধাক্কা খেয়ে একজন অবশ্যই কুপোকাত হবে। সেকালের উত্তম সুচিত্রা থেকে শুরু করে অধুনা শাবনূর- রিয়াজ পর্যন্ত সব জায়গাতেই একই ঘটনা। আফসোস আমিই খালি মারমুখো আন্টিদের সাথে ধাক্কা খাই :(
উহারণ হিসাবে এই বিজ্ঞাপনটিকে ধরা যায়। সার্বিক ভাবে এই বিজ্ঞাপনটা আমার কাছে ইতিবাচক মনে হয়েছে। শারিরীক পরিশ্রমের ক্ষেত্রেও মেয়েরা পিছিয়ে থাকবে না। বলিষ্ঠ বাংলাদেশ গড়তে বলিষ্ঠ নারী-পুরুষ উভয়েরই প্রয়োজন । রেডি শব্দটা যদিও একটু চোখে লেগেছে।
এই বিজ্ঞাপনটি নিয়ে বাংলাদেশে সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে। এমনকি মেয়েরাও জোর গলায় বলছে বিজ্ঞাপনটি অশ্লীল। কারণ একটা দুধের প্রচারণায় শক্তিশালী নারীকে মডেল হিসাবে ব্যাবহার করা হয়েছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ শিশুই অপুষ্টিতে ভোগে। মেয়েরা আরো বেশি। ৩০ পেরিয়েই ধুকতে থাকে অস্টিওপোরেসিসে। সেই মেয়েদেরকে দুধ খেতে উত্সাহিত করতে একজন বলিষ্ঠ নারীর ইমেজ ব্যবহার করাটাই স্বাভাবিক।
এর চেয়ে বরং ত্বকের রঙ ফর্সাকারী ক্রীমের বিজ্ঞাপন অনেক বেশী অশ্লীল। কিন্তু সেটা নিয়ে আমরা সমালোচনা করি না। কারণ এই বিজ্ঞাপন গুলো আমাদের সেক্সিস্ট মানষিকতা সমর্থন করে।
"ঘুম পরীক্ষার দূরত্বের বর্গের ব্যাস্তানুপাতিক " রানা স্যারের এই অমোঘ সূত্র আমার জীবনের ধ্রুব সূত্র। পরীক্ষা সামনে এলেই ঘুমের পরিমাণ বাড়তে থাকে। বই খুললেই চোখ বন্ধ হয়ে আসে। আর টিভি খুললেই ঘুম চলে যায়। সব কিছুই ভালো লাগে। জাজ শো, ভুয়া ডকুমেন্টারি , বহুবার দেখা মুভি সবই। ঘন্টা খানেক পড়লেই মনে হয়, হাতে পায়ে জং ধরে যাচ্ছে, যাই একটু দৌড়ে আসি। গ্রীষ্মের এই রোদেও খারাপ লাগে না।
এ বছর পরিবেশ বাচাঁতে কোন কিছুই প্রিন্ট করিনি। সব নোটস, রিভিউ পিডিএফে পড়ি আর একটু পরপর ফেসবুক, ইউটিউব, গুগোল রিডার গুঁতাই; ঘন্টার পর ঘন্টা অনলাইনে বসে থাকি। ইমেইলের রিপ্লাই দিতে ত্বর সয় না। মাঝে কিছুদিন ফেসবুক থেকে দূরে ছিলাম। অনেক কিছুই নতুন ঠেকছে। সবচেয়ে ভয়ানক জিনিসটা হল সাইবার বুলিং। কোন প্রকার উস্কানি ছাড়াই অচেনা লোকজন অফেন্সিভ মেসেজ করে।
পরীক্ষা শেষেই অবস্থা পুরা ১৮০ ডিগ্রী ভিন্ন। টিভিতে দেখার কিছুই পাইনা। ফেসবুক বিরক্ত লাগে। দৌড়াতে আলস্য লাগে। গান শুনলেও মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। কিছুই ভালো লাগে না।
মেলা আর ধাক্কা :
এবারে বেশ ঘটা করে বৈশাখী মেলায় গেলাম। প্রচুর মানুষ। ভীড়। এই প্রথম আমি মেলা উপভোগ করলাম। এতদিন আড়ষ্ট উচ্চারণের বাংলা গান শুনেই মেজাজ চড়ে যেত। গতবারের মেলায় এক বিশাল মহিলাকে আন্টি ডেকে প্রচন্ড ঝাড়ি খেয়েছিলাম। এবার আর সেই ঝুঁকি নেইনি। বয়স যতই হোক সবাইকে আপু বা ভাইয়া ডাকা শুরু করলাম। ফলাফল আশাতীত। লাইন ভেঙ্গে আমার কাছে খাবার বিক্রি করছে। খাবারে দাম অনেক হলেও বহুদিন পর ইলিশ মাছ আর ভাপা পিঠা খেলাম। বৈশাখি মেলায় গিয়ে বুঝলাম ধাক্কা কি কি ও কত প্রকার। যেদিকে যাই সেখানেই ধাক্কা খাই। ছেলে, বুড়ো, নারী পুরুষ নির্বিবিষে কেবলই ধাক্কা খাই। অবশ্য বাঙ্গালী জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হল ধাক্কা। আমার দেখা শতকরা ৯০% সিনেমায় নায়ক নায়িকার প্রথম মোলাকাত ধাক্কার মাধ্যমে। ধাক্কা খেয়ে একজন অবশ্যই কুপোকাত হবে। সেকালের উত্তম সুচিত্রা থেকে শুরু করে অধুনা শাবনূর- রিয়াজ পর্যন্ত সব জায়গাতেই একই ঘটনা। আফসোস আমিই খালি মারমুখো আন্টিদের সাথে ধাক্কা খাই :(
জ্যাজ ফেস্টিভালঃ
ডেন্টনে দেশের ২য় বৃহত্তম জ্যাজ ফেস্টিভাল হয়। সারা দেশ থেকে জ্যাজ শিল্পী , অনুরাগীরা আসে। সাথে থাকে কার্নিভাল ফুড, বাঞ্জি জাম্পিং, নানারকম রাইড, ছবি প্রদর্শনী, ওয়াইন টেস্টিং। আমি জ্যাজ সঙ্গীত আর কার্নিভাল ফুডের ভক্ত। যদিও পরীক্ষার কারণে যাওয়া হয়েছে কেবল একবার। ফেস্টিভালে আসা মানুষের ভিড়ে আমার ছোট্ট শহর লোকেলোকারণ্য। খুবই অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম- এত্ত লোকের মাঝেও একবারো কোন ধাক্কা খেলাম না বা কোন অপ্রিতীকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি। সবাই নিয়ম মেনে চলছে। কোন বিশৃংখলা নেই।বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা আর সেগগ্রিগেশনঃ
এবার আমরা জাতিসঙ্ঘের মিলিয়েনিয়াম লক্ষ্য পূরণের জন্য একটা প্রজেক্টে কাজ করলাম। আমাদের বিষয় ছিলো দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায়,শিক্ষা ব্যবস্থায় নারী পুরুষের বৈযম্য ( Gender disparity in South East Asia ). মডেল হিসাবে আমারা বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছিলাম। এর আগে নিজের দেশকে, এভাবে বিদেশীর চোখে দেখার সুযোগ হয়নি। যেটা আমাদের কাছে খুব স্বাভাবিক মনে হয়, অন্য পরিবেশে বড় হওয়া কারো কাছে সেটা প্রায় সপ্তম আশ্চর্য। আমাদের দেশে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত বেশীরভাগ ভাল স্কুলই সেগগ্রিগেটেড। ছেলে আর মেয়ে শিশুদের জন্য আলাদা আলাদা স্কুল। ছেলেদের জন্য কৃষিশিক্ষা , মেয়েদের জন্য গার্স্থথ্য অর্থনীতি। ছোটবেলা থেকেই ছেলে মেয়েদের আলাদা করে বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে তোমরা ভিন্ন। এতে করে শিশুকাল থেকেই ছেলেমেয়েরা হয়ে উঠছে সেক্সিস্ট। আমার মনে হয় এই কারণেই মেয়েরা আরো বেশী পিছিয়ে পড়ছে। হয়তো এটা খুবই মোটাদাগের সরলীকরণ হয়ে গেল কিন্তু বাস্তবতা অনেক সময়ই পলিটিক্যালি কারেক্ট হয় না।উহারণ হিসাবে এই বিজ্ঞাপনটিকে ধরা যায়। সার্বিক ভাবে এই বিজ্ঞাপনটা আমার কাছে ইতিবাচক মনে হয়েছে। শারিরীক পরিশ্রমের ক্ষেত্রেও মেয়েরা পিছিয়ে থাকবে না। বলিষ্ঠ বাংলাদেশ গড়তে বলিষ্ঠ নারী-পুরুষ উভয়েরই প্রয়োজন । রেডি শব্দটা যদিও একটু চোখে লেগেছে।
এই বিজ্ঞাপনটি নিয়ে বাংলাদেশে সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে। এমনকি মেয়েরাও জোর গলায় বলছে বিজ্ঞাপনটি অশ্লীল। কারণ একটা দুধের প্রচারণায় শক্তিশালী নারীকে মডেল হিসাবে ব্যাবহার করা হয়েছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ শিশুই অপুষ্টিতে ভোগে। মেয়েরা আরো বেশি। ৩০ পেরিয়েই ধুকতে থাকে অস্টিওপোরেসিসে। সেই মেয়েদেরকে দুধ খেতে উত্সাহিত করতে একজন বলিষ্ঠ নারীর ইমেজ ব্যবহার করাটাই স্বাভাবিক।
এর চেয়ে বরং ত্বকের রঙ ফর্সাকারী ক্রীমের বিজ্ঞাপন অনেক বেশী অশ্লীল। কিন্তু সেটা নিয়ে আমরা সমালোচনা করি না। কারণ এই বিজ্ঞাপন গুলো আমাদের সেক্সিস্ট মানষিকতা সমর্থন করে।
Comments
Post a Comment