Skip to main content

এলোমেলো দিনলিপি ৭


কদিন আগে এক বান্ধবীর সাথে অনেকটা ঝোঁকের মাথায়ই ট্যারোট কার্ড রিডারের
কাছে গিয়েছিলাম। আমার ধারণা ছিলো ট্যারোট কার্ড রিডার মাথায় পাগড়ী , হাতে ক্রিষ্টাল বল নিয়ে আলো আঁধারির মাঝে বসে থাকবে। গিয়ে দেখলাম তেমন কিছুই না। দুই সন্তানের মা , এক পার্শিয়ান মহিলা। আমি আমার ভূত , ভবিষ্যত, বর্তমান জানতে কয়েকটা কার্ড তুলে তার হাতে দিলাম।

সে আমার সম্পর্কে কিছু সাধারণ কথা বলল। যা কি না আমার বাদামী রঙ দেখেই বলা সম্ভব। মহিলার পর্যবেক্ষণ শক্তি তেমন একটা ভালো না। আমার হাতে আংটি খেয়াল না করেই আমার কপালে বিয়ে নাই জাতীয় কথা -বার্তা বলা শুরু করলো। আমিও তাল মেলালাম।

তবে কয়েকটা কথা ঠিক ও বলতে পেরেছে দেখে কিছুটা অবাক হলাম। আমি খুব আগ্রহ নিয়ে মহিলার ভবিষ্যতবাণী ঠিক কীনা জানার জন্য অপেক্ষা করছি।



মে মাসের শেষ দিকে এসে আমার বুড়ো গাড়িটা বিনা নটিশে্‌ বিগড়ে বসলো ! ভাবখানা এমন...
"মকা পাইসো ? আমি দিন রাত তোমাকে নিয়ে চরকি ঘুরবো আর তুমি দিনে দিনে হাতি থেকে হিপো্‌ হবে? যাও বাবা ঘুরতে হয় তো নিজের পায়ে হেটেঁ চল।"

প্রথমে আমার মাথায় হাত গাড়ি ছাড়া কিভাবে চলবো? তাও আবার এই চান্দি ফাটা গরমে। প্রথমে দু'দিন বাসা থেকে কাজ করলাম। সপ্তাহান্তে গাড়ি সারাই এর দোকানে নিয়ে গেলাম। মিস্ত্রী আমার সাথে মিষ্টি মুখে নানা গল্প করে একটা বিশাল ফর্দো ধরায় দিল। কী কী ঠিক করতে হবে আর কেমন খরচ পড়বে।
গাড়ি নষ্ট হয়াতে মাথায় হার দিয়েছিলাম। আর ফর্দো দেখে মাথার চুল সব ছিড়ে ফেলতে ইচ্ছা করছিলো। নেহাত ই টাক মাথা বউ এর সাথে ঘর না করার হুমকিতে অতি কষ্টে সে ইচ্ছা চেপে গেলাম।
সব ভেবে চিন্তে ঠিক করলাম আর সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি না এবার ব্রান্ড নিউ লাল টুকটুকে একটা গাড়ি কিনবো। আমার বহুদেনের ইচ্ছা ট্রাক কিনা। টেক্সাসে থেকে ট্রাক না চালালেই নয়। আর ট্রাক এ চরলে নিজেকে রাস্তার রাজা মনে হয়। এর মাঝে অফিস ট্যুরে টেক্সাসের পশ্চিম প্রান্ত (wild wild west) ঘুরে আসলাম ট্রাকে করে। মরুভূমির মাঝে, কেবল নুড়ি বিছানো রাস্তায় ট্রাক চড়লে মনে হয় আকাশের মাঝে পাখির মত উড়ে চলেছি। ইয়ামীনকে বলতেই প্রথমেই ভেটো দিয়ে দিলো। শেষে আমার জোড়াজুড়ীতে বললো - "তোমার বেশী ইচ্ছা হলে কিনো"
যাই হোক সব দিক চিন্তা করে শেষ পর্যন্ত একটা এস.ইউ.ভি (suv) কিনলাম, নীল রঙের।




প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ দীর্ঘ দিন ক্যন্সারে ভুগে চলে গেলেন চির শান্তির দেশে। আমার শৈশব কৈশোরের অসাধারণ কিছু সময় কেটেছে তারঁ বই পড়ে।  আর কখনো হিমু, মিসির আলী, শুভ্রের নতুন বই পড়া হবে না ভেবে খুবই খারাপ লাগছিলো। 


Comments

Popular posts from this blog

টোনা টুনির গল্প

এক দেশে ছিলো এক টোনা আর এক টুনি। এক ছুটিরদিন সকালে টোনা, টুনিকে ডাকিয়া কহিল -“টুনি ভাপা পিঠা খাওয়ার শখ হইতেছে।” শুনিয়া টুনি ফ্রিজ খুলিয়া দেখিল, কেবল শুকনো রুটি আর পনির পড়িয়া আছে। টুনি বলিল – -“ফ্রীজে কিছুই নাই। বাজার হইতে ভাপা পিঠা রাধিঁবার সরঞ্জাম লইয়া আস। - টোনা শুধায় “কি কি লাগিবে ফর্দ দাও।” টুনি পড়িল মহা চিন্তায়, ভাপা পিঠা কি উপায়ে রাধেঁ , কি কি লাগে সবই তো তার অজানা। ভাবিতে ভাবিতে ঘরের কোণায় যত্ন করিয়া রাখা দেশ বিদেশের পিঠা বইখানি টানিয়া লইলো। তাহা হইতে যাহা যাহা দরকার সব লিস্ট করিয়া টোনাকে দিয়া বলিল – “তাড়াতাড়ি এইসব লইয়া আস।” বিরস মুখে বাজারের থলি হাতে টোনা বাহির হইল। টুনি ভাবে, মায়ের কাছ থেকে ভাল উপায়ে ভাপা পিঠা রন্ধন প্রনালী শিখিয়া নেয়া দরকার। মাকে ফোন করিয়া ঘটনা জানাইতেই তিনি টোনার উপর যারপর নাই চটিয়া গিয়া কহিলেন- -“টোনা তাহার কন্যা কে পাহিয়াছে কি? ছুটির দিনেও রান্নাঘর থেকে ছুটি দিতেছে না।” অবস্থা বেশি সুবিধার না আঁচ করিয়া টুনি ফোন রাখিয়া দিয়া ভাবিল শ্বাশুড়িমাতার কাছ থেকেই না হয় শিখিয়া লওয়া যাক। ঘটনা শুনিয়া শ্বাশুড়িমাতা “টোনার দুর্ভাগ্যের জন্য যারপর নাই দুঃখ প্রকাশ করি

হাড়ে হাড়ে চিনি তোমায়...

হাড়ে হাড়ে চিনি তোমায় কচু ভালোবাসো আমায়' আমার লগে কর অভিনয়... জানি তুমি, চক্ষু দু’টা বাইন্ধ্যা রাখস্‌ সামনের বাড়ির জানালায়।। ফাজিল মাইয্যার নাম কি জানি, শিবানী না কি সর্বানী, মাইয্যার চোখে মুখে জ্বলে রাশি রাশি শয়তানি। রাশি রাশি শয়তানি রে… ইশারাতে চলতাছে চলুক, লোকে বলতাসে বলুক। আমার সংসারে যদি আগুন জ্বলে তবে, রিপোর্ট করব চাচার থানায়, প্রেম কর বইয়া জেলখানায়। মনে রাইখো এই কথাটি, প্রেম কইরা করস বিয়া, তোমের ঘরে আইলাম আমি, সব কিছু ছাইরা দিয়া, সব কিছু ছাইরা দিয়া হায়!! সেই মনুমেন্টের নিচে বইয়া, ফুচুফুচু কথা শুনাইয়া, আও গ্রাম ঘাটের ধারে, প্রথম প্রেমের কবিতা পইড়া, আমারে পাগোল বানাইলেও, পরাণ হয় পাগোল, উঁকিঝুকি মাইরো না আর, ছিঃহ্‌!! এ সকল কি তোমার মানায়??

ভাবনাগুলো এলোমেলো

সবকিছু বড্ড বেশী ধোঁয়াশা লাগে আজকাল।  পৃথিবী নতুন লাগছে। নাকি আমিই হয়তো বদলে গিয়েছি। কিংবা আমি না সময়টাই বদলে গিয়েছে। গতকাল একটা ফর্ম পূরণ করতে গিয়ে খেয়াল করলাম বয়সের ঘরটা্র  পরিবর্তন হয়েছে।  বদলে গিয়েছে আরো অনেক কিছুই। সবাই সেমেষ্টার  ফাইনাল পরীক্ষার জন্য পড়ছে। আমার স্কুল নেই, বই নেই, পরীক্ষা নেই। কখনো ভাবিনি পরীক্ষা নেই বলে অফসোস করবো !!! হয়তো আমিই বদলে গিয়েছি অনেক বেশি। জীবনে এসে পড়েছে অনেক দায়িত্ব। অচেনা কিছু মানুষ নতুন সম্পর্কের টানে আপন হয়ে উঠেছে; আবার আপন কিছু মানুষ অদ্ভূত নির্লিপ্ততায় দূরে সরে গেছে।  স্বতঃস্ফূর্ত জীবনের মাঝে ঢুকে গিয়েছে  হিসাব নিকেশ, অনেক প্রত্যাশা আর  হতাশা। আর ঠিক এক সপ্তাহ পরে চলে যাচ্ছি নতুন একটা শহরে।  অনিশ্চিত জীবনে।  আবার কখনো হয়তো ফিরে আসবো এই চেনা শহরে, কিন্তু তখন কী আজকের চেনা মানুষ গুলো এমনই থাকবে?? সব পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করতে গিয়ে যেন তলিয়ে যাচ্ছি।