Skip to main content

বন্ধুত্ব - যখন তখন

বন্ধুত্ব জিনিসটা একেবারেই হিসাব ছাড়া। কে, কখন, কিভাবে, কোন পরিস্থিতিতে নিছক পরিচিত থেকে প্রিয় বন্ধু হয়ে উঠবে তা আগে থেকে জানা অসম্ভব। আবার সময়ের সাথে সাথে একই বন্ধু বা বন্ধুতার ধরণ ও পালটে যায়। কিছু বন্ধু থাকে আত্মার খুব কাছে। যে কোন দুঃসময়ে এদের কথা সবার প্রথমে মনে আসে। কিছু বন্ধুত্ব অবস্থান ভিত্তিক - একসাথে ঘোরাঘুরি, আড্ডাবাজি টাইপ। আবার কিছু বন্ধুত্ব প্রয়োজনের তাগিদে। কিন্তু বন্ধুত্ব যেমনই হোক, নানা জীবন অভিজ্ঞতার সাথে তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পালটে যায়।
সদ্য নারী মহলে ভীষণ জনপ্রিয় এক ব্যাচেলরকে স্বামী বানানো - বান্ধবীকে প্রশ্ন করলাম -
আচ্ছা তুমি কী ভাইয়াকে, অন্য ভাবী/ বান্ধবীদের সাথে গল্প করলে বকা দাও?
- অবশ্যই
এটা শুধু ছেলে- মেয়ে বন্ধুত্বের ক্ষেত্রেই নয়, সেইম সেক্স বন্ধুত্বের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
মনে করুন, রুমা ও সোমা দারূণ বন্ধু। রোজ দেখা বা কথা না হলে কারো পেটের ভাত হজম হয় না টাইপ। রুমার আগে বিয়ে হয়ে গেল। সোমা লক্ষ্য করলো রুমার প্রায়োরিটি বদলে গিয়েছে। তার কথা বার্তাও গিন্নীবান্নি হয়ে গিয়েছে। আস্তে আস্তে সোমার সাথে দুরত্ব বাড়তে থাকলো। আবার সোমার বিয়ের সময় রুমা খুবই কাছে চলে এলো । বউ সাজানো, শ্বশুড়বাড়ির সবাইকে ম্যানেজ করা , বাসর রাত সব কিছু নিয়েই তাদের কথা হতে লাগলো। আবার আগের মত একসাথে আড্ডাবাজি, ঘোরাঘুরি করতে শুরু করলো। স্বামীদের কাছ থেকে তেমন উতসাহ না পেলেও রুমা -সোমা মাস্টার প্ল্যান ফেঁদে বসলো কক্সবাজার বেড়াতে যাওয়ার ।
দেখা গেল রুমা ও সোমার স্বামীরা একে , অপরকে খুব একটা পছন্দ করছে না। তাদের এখন রোজ কথা হলেও দেখা প্রায় হয় না বললেই চলে। রুমার স্বামী চায় তার বন্ধুদের আড্ডায় রুমাকে নিয়ে যেতে; রূমা সোমাদেরও আসতে বলে। কিন্তু সোমার স্বামী খুব একটা পছন্দ করে না। তাই প্রথমে দু- একবার এলেও , সোমা আজকাল এটা সেটা বলে পাশ কাটিয়ে যায় ।
এর মাঝে রুমা মা হল; এখন তার সব কথাই এখন শুরু ও শেষ হয় "আমাদের বাবুটা দিয়ে... "
সোমা যে তাকে তার প্রোমশনের সুখবরটা জানালো , রুমা খুবই দায়সারা ভাবে তাকে অভিনন্দন জানালো। রুমা - সোমার দূরত্ব আবার বাড়তে লাগলো।
একইভাবে রুমন-সুমনের বন্ধুত্বও পাল্টে যায় নানা জীবন অভিজ্ঞতায়।
এভাবেই জীবনের নানা পরিবর্তনের সাথে সাথে বন্ধুত্বের ধরণ পালটে যায়। নতুন বন্ধু আসে। পুরানো বন্ধু হারিয়ে যায়। বন্ধু যেমনই হোক , তাকে ছাড়া জীবন পুরাই পানসে্. . Smile

প্রথম প্রকাশ : আমরা বন্ধু ফেব্রুয়ারী ২২, ২০১২

Comments

Popular posts from this blog

টোনা টুনির গল্প

এক দেশে ছিলো এক টোনা আর এক টুনি। এক ছুটিরদিন সকালে টোনা, টুনিকে ডাকিয়া কহিল -“টুনি ভাপা পিঠা খাওয়ার শখ হইতেছে।” শুনিয়া টুনি ফ্রিজ খুলিয়া দেখিল, কেবল শুকনো রুটি আর পনির পড়িয়া আছে। টুনি বলিল – -“ফ্রীজে কিছুই নাই। বাজার হইতে ভাপা পিঠা রাধিঁবার সরঞ্জাম লইয়া আস। - টোনা শুধায় “কি কি লাগিবে ফর্দ দাও।” টুনি পড়িল মহা চিন্তায়, ভাপা পিঠা কি উপায়ে রাধেঁ , কি কি লাগে সবই তো তার অজানা। ভাবিতে ভাবিতে ঘরের কোণায় যত্ন করিয়া রাখা দেশ বিদেশের পিঠা বইখানি টানিয়া লইলো। তাহা হইতে যাহা যাহা দরকার সব লিস্ট করিয়া টোনাকে দিয়া বলিল – “তাড়াতাড়ি এইসব লইয়া আস।” বিরস মুখে বাজারের থলি হাতে টোনা বাহির হইল। টুনি ভাবে, মায়ের কাছ থেকে ভাল উপায়ে ভাপা পিঠা রন্ধন প্রনালী শিখিয়া নেয়া দরকার। মাকে ফোন করিয়া ঘটনা জানাইতেই তিনি টোনার উপর যারপর নাই চটিয়া গিয়া কহিলেন- -“টোনা তাহার কন্যা কে পাহিয়াছে কি? ছুটির দিনেও রান্নাঘর থেকে ছুটি দিতেছে না।” অবস্থা বেশি সুবিধার না আঁচ করিয়া টুনি ফোন রাখিয়া দিয়া ভাবিল শ্বাশুড়িমাতার কাছ থেকেই না হয় শিখিয়া লওয়া যাক। ঘটনা শুনিয়া শ্বাশুড়িমাতা “টোনার দুর্ভাগ্যের জন্য যারপর নাই দুঃখ প্রকাশ করি...

হাড়ে হাড়ে চিনি তোমায়...

হাড়ে হাড়ে চিনি তোমায় কচু ভালোবাসো আমায়' আমার লগে কর অভিনয়... জানি তুমি, চক্ষু দু’টা বাইন্ধ্যা রাখস্‌ সামনের বাড়ির জানালায়।। ফাজিল মাইয্যার নাম কি জানি, শিবানী না কি সর্বানী, মাইয্যার চোখে মুখে জ্বলে রাশি রাশি শয়তানি। রাশি রাশি শয়তানি রে… ইশারাতে চলতাছে চলুক, লোকে বলতাসে বলুক। আমার সংসারে যদি আগুন জ্বলে তবে, রিপোর্ট করব চাচার থানায়, প্রেম কর বইয়া জেলখানায়। মনে রাইখো এই কথাটি, প্রেম কইরা করস বিয়া, তোমের ঘরে আইলাম আমি, সব কিছু ছাইরা দিয়া, সব কিছু ছাইরা দিয়া হায়!! সেই মনুমেন্টের নিচে বইয়া, ফুচুফুচু কথা শুনাইয়া, আও গ্রাম ঘাটের ধারে, প্রথম প্রেমের কবিতা পইড়া, আমারে পাগোল বানাইলেও, পরাণ হয় পাগোল, উঁকিঝুকি মাইরো না আর, ছিঃহ্‌!! এ সকল কি তোমার মানায়??

জেনে শুনে বিষ করেছি পান

জেনে শুনে বিষ করেছি পান আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান প্রাণেরও আশা ছেড়ে সপেঁছি প্রাণ যতই দেখি তারে ততই দহি আপনো মনো জ্বালা নিরবে সহি , তবু পারিনে দুরে যেতে, মরিতে আশে লহিবো বুক পেতে অননও বান। জেনে শুনে বিষ করেছি পান আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান । যতই হাসি দিয়ে দহনও করে ততই বাড়ে তৃষা প্রেমেরও তরে - প্রেমও অমৃত ধারা যতই যাচি ততই করে প্রাণে অশনি দ্বান। আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান প্রাণেরও আশা ছেড়ে সপেঁছি প্রাণ আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান । - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমি জেনে শুনে বিষ আজকে আমার আমেরিকা জীবনের চার বছর পূর্ণ হল। আমেরিকা বা বাংলাদেশ কোনটাই আমার কাছে বিষ নয় বরং গলার মাঝে আটকে থাকা বাষ্পের মত। এই বাষ্প কখনো আমেরিকা; আবার কখনো বাংলাদেশ। বড় অদ্ভূত এই টানা পোড়ন - ঠিক এই গানটার মত।