Skip to main content

খাপছাড়া -৩

স্বপ্ন বিড়ম্বনা
আজকাল মাঝে মাঝেই একটা স্বপ্ন দেখি -  দেশে যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছি, কিন্তু  যেতে পারছি না। আমাকে ফেলে রেখেই প্লেন চলে যাচ্ছে। একটু এদিক সেদিক করে বারে বারে এ স্বপ্নটা দেখি। ভয় হয়- আদৌ কী আর দেশে যাওয়া হবে ?

নামের কথকথা
আমার নামে  কোমল বর্ণ থাকলেও, ইংরেজী ভাষীরা দু'-একবারের চেষ্টাতে মোটামোটি উচ্চারণ করতে পারে। লোকজন ডাকে  "ড়াডিয়া/ র‌্যাডিয়া/রাদিয়া" এর মাঝামাঝি কিছু।  সবার মুখে শুনতে শুনতে আমিও পরিচয় দি ড়াডিয়া। সম্বোধন নিয়ে আমার তেমন কোন প্রেজুডিস নাই। কারো নাম সম্বোধন না করেও দীর্ঘ সময় কথা বলা যায়।
আজকাল লক্ষ্য করছি মানুষ জন আমাকে ডাকছে "ড়ায্যা/রাযা/রায্যায়া/র‌্যায্যায় "। কেবল নতুন পরিচিতরা না , অন্যরাও বলছে।, বহুদিন পর কথা হওয়া আমার পুরানো বসও আমাকে "ড়ায্যা/রাযা/রায্যায়া " বলছে। ও আমাকে আগে ঠিকই র‌্যাডিয়া বলত এবং ওর সামনে আবশ্যই আমার নাম লেখা ছিল। তাহলে কী  ভাষার বিবর্তনে "ডি "(D)  উচ্চারণ আজকাল "যি" (Z)  এর মত হয়ে যাচ্ছে? নাকি আমার শোনায় ভুল?

মরিচীকা
প্রচন্ড গরম। বাইরে বের হলেই গা চিরবির করে। প্রায় প্রতিদিনই তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রী ফা. এর আশেপাশে থাকছে।  মাঝে মাঝে একটা দুটা ভাসা মেঘ দেখা যায়। এতে গরম আরো বেড়ে যায়। গুমোট দশা।  গরম থেকে বাচঁতে জানালায় ভারী পর্দা টেনে- ঘরে  বাতি জ্বলিয়ে রেখেছি। আর সাথে বেজে চলেছে বৃষ্টির শব্দ। বৃষ্টি শুনতে শুনতে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি।  ঘুম থেকে উঠে  বিভ্রান্ত হয়ে যাই।  আইটিঊনের বৃষ্টিকে সত্য মনে হয়।  ঝুম বৃষ্টিতে ভিজবো বলে বারান্দায় এসে দাড়াই - বাইরে তখনো গনগনে সূর্যটা চোখ পাকিয়ে আছে

Waka Waka
ফুটবল আমার তেমন পছন্দের খেলা নয়।  তবে বিশ্বকাপের কথা আলাদা। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে খেলার খোঁজ খবর রাখি । এবার সহকর্মীদের পাল্লায় পরে ভালোই আপডেট পাচ্ছি। অফিসে বসে সবাই লাইভ খেলা দেখে। গোল হলেই নোটিফিকেশন আসতে থাকে। ভিন্ন দলের সমর্থকদের মধ্যে মৃদু  ইট -পাটকেল চলে।সবার মধ্যেই বিশ্বকাপ উন্মাদনা। সব মিলিয়ে আমি এবারের বিশ্বকাপ উপভোগ করছি। আসলে খেলা সবাই মিলে না দেখতে পারলে জমে না। আমি ইউ.এস.এ আর ব্রাজিলকে সমর্থন করছি।
তবে ফুটবলের জ্বরে অনেকই অন্যদেশের পতাকাকে অবমাননা করছে। ফেসবুকে দেখি প্রতিদ্বন্দী দলের দেশের জাতীয় পতাকাকে হেয় করে ছবি বানিয়ে - তাতে আবার বন্ধুদের ট্যাগ করে। এরকম একটা ছবিতে ট্যাগিত হওয়ার পর এক দক্ষিণ আমেরিকান বন্ধুর কাছে খুবই বিব্রত হতে হয়েছে।

ওয়েল স্পিল
গালফ অব মেক্সিকো উপকূলে , ব্রিটিশ পেট্রোলিয়ামের একটা তেল খনিতে বিস্ফোরণ হয়ে পুরো উপকূলে তেল ছড়িয়ে পড়ছে। প্রতিদিন প্রায় ৪০-৫০ হাজার গ্যালন তেল ছড়িয়ে পড়ছে খোলা সাগরে। এই তেল লুইজিয়ানা থেকে ফ্লোরিডার উপকূল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। মাছ, সামুদ্রিক প্রাণী মারা যাচ্ছে। প্রায় দু'মাস হতে চললো এখনো বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এই দুর্যোগের সাথে সিলেটের ট্যাংরাটিলার গ্যাস বিস্ফোরণের অনেক মিল। বড় বড় কোম্পানিগুলো প্রাকৃতিক সম্পদ আহোরণের জন্য যে পরিমান অর্থ ব্যয় করে, সে তুলনায় এসব খনির রক্ষণাবেক্ষনের জন্য কিছুই প্রায় খরচ করে না।
সবচেয়ে খারাপ লেগেছে ব্রাউন পেলিকিনদের জন্য। এই পাখিটি মাত্র গত বছর বিলুপ্ত প্রায় প্রানীর তালিকা থেকে বেরিয়ে এসেছে। আমার খুবই ইচ্ছা করছে এই পাখিগুলোকে বাচাঁনোর জন্য কিছু করতে।

Comments

Popular posts from this blog

টোনা টুনির গল্প

এক দেশে ছিলো এক টোনা আর এক টুনি। এক ছুটিরদিন সকালে টোনা, টুনিকে ডাকিয়া কহিল -“টুনি ভাপা পিঠা খাওয়ার শখ হইতেছে।” শুনিয়া টুনি ফ্রিজ খুলিয়া দেখিল, কেবল শুকনো রুটি আর পনির পড়িয়া আছে। টুনি বলিল – -“ফ্রীজে কিছুই নাই। বাজার হইতে ভাপা পিঠা রাধিঁবার সরঞ্জাম লইয়া আস। - টোনা শুধায় “কি কি লাগিবে ফর্দ দাও।” টুনি পড়িল মহা চিন্তায়, ভাপা পিঠা কি উপায়ে রাধেঁ , কি কি লাগে সবই তো তার অজানা। ভাবিতে ভাবিতে ঘরের কোণায় যত্ন করিয়া রাখা দেশ বিদেশের পিঠা বইখানি টানিয়া লইলো। তাহা হইতে যাহা যাহা দরকার সব লিস্ট করিয়া টোনাকে দিয়া বলিল – “তাড়াতাড়ি এইসব লইয়া আস।” বিরস মুখে বাজারের থলি হাতে টোনা বাহির হইল। টুনি ভাবে, মায়ের কাছ থেকে ভাল উপায়ে ভাপা পিঠা রন্ধন প্রনালী শিখিয়া নেয়া দরকার। মাকে ফোন করিয়া ঘটনা জানাইতেই তিনি টোনার উপর যারপর নাই চটিয়া গিয়া কহিলেন- -“টোনা তাহার কন্যা কে পাহিয়াছে কি? ছুটির দিনেও রান্নাঘর থেকে ছুটি দিতেছে না।” অবস্থা বেশি সুবিধার না আঁচ করিয়া টুনি ফোন রাখিয়া দিয়া ভাবিল শ্বাশুড়িমাতার কাছ থেকেই না হয় শিখিয়া লওয়া যাক। ঘটনা শুনিয়া শ্বাশুড়িমাতা “টোনার দুর্ভাগ্যের জন্য যারপর নাই দুঃখ প্রকাশ করি

হাড়ে হাড়ে চিনি তোমায়...

হাড়ে হাড়ে চিনি তোমায় কচু ভালোবাসো আমায়' আমার লগে কর অভিনয়... জানি তুমি, চক্ষু দু’টা বাইন্ধ্যা রাখস্‌ সামনের বাড়ির জানালায়।। ফাজিল মাইয্যার নাম কি জানি, শিবানী না কি সর্বানী, মাইয্যার চোখে মুখে জ্বলে রাশি রাশি শয়তানি। রাশি রাশি শয়তানি রে… ইশারাতে চলতাছে চলুক, লোকে বলতাসে বলুক। আমার সংসারে যদি আগুন জ্বলে তবে, রিপোর্ট করব চাচার থানায়, প্রেম কর বইয়া জেলখানায়। মনে রাইখো এই কথাটি, প্রেম কইরা করস বিয়া, তোমের ঘরে আইলাম আমি, সব কিছু ছাইরা দিয়া, সব কিছু ছাইরা দিয়া হায়!! সেই মনুমেন্টের নিচে বইয়া, ফুচুফুচু কথা শুনাইয়া, আও গ্রাম ঘাটের ধারে, প্রথম প্রেমের কবিতা পইড়া, আমারে পাগোল বানাইলেও, পরাণ হয় পাগোল, উঁকিঝুকি মাইরো না আর, ছিঃহ্‌!! এ সকল কি তোমার মানায়??

ভাবনাগুলো এলোমেলো

সবকিছু বড্ড বেশী ধোঁয়াশা লাগে আজকাল।  পৃথিবী নতুন লাগছে। নাকি আমিই হয়তো বদলে গিয়েছি। কিংবা আমি না সময়টাই বদলে গিয়েছে। গতকাল একটা ফর্ম পূরণ করতে গিয়ে খেয়াল করলাম বয়সের ঘরটা্র  পরিবর্তন হয়েছে।  বদলে গিয়েছে আরো অনেক কিছুই। সবাই সেমেষ্টার  ফাইনাল পরীক্ষার জন্য পড়ছে। আমার স্কুল নেই, বই নেই, পরীক্ষা নেই। কখনো ভাবিনি পরীক্ষা নেই বলে অফসোস করবো !!! হয়তো আমিই বদলে গিয়েছি অনেক বেশি। জীবনে এসে পড়েছে অনেক দায়িত্ব। অচেনা কিছু মানুষ নতুন সম্পর্কের টানে আপন হয়ে উঠেছে; আবার আপন কিছু মানুষ অদ্ভূত নির্লিপ্ততায় দূরে সরে গেছে।  স্বতঃস্ফূর্ত জীবনের মাঝে ঢুকে গিয়েছে  হিসাব নিকেশ, অনেক প্রত্যাশা আর  হতাশা। আর ঠিক এক সপ্তাহ পরে চলে যাচ্ছি নতুন একটা শহরে।  অনিশ্চিত জীবনে।  আবার কখনো হয়তো ফিরে আসবো এই চেনা শহরে, কিন্তু তখন কী আজকের চেনা মানুষ গুলো এমনই থাকবে?? সব পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করতে গিয়ে যেন তলিয়ে যাচ্ছি।