Skip to main content

শুভ্র গেছে বনে

হুমায়ুন আহমেদের সৃষ্ট চরিত্র গুলোর মধ্যে আমার সবচেয়ে পছন্দ শুভ্রকে। পৃথিবীর শুদ্ধতম মানুষ। বাস্তবতা তাকে এখনো কুলষিত করতে পারেনি; চশমা পড়ে; একটু বোকা।  এবাররের বই মেলায় শুভ্রকে নিয়ে লেখা বই "শুভ্র গেছে বনে" । হুমায়ুন আহমেদের সাম্প্রতিক সময়ের বইগুলোর নির্দিষ্ট একটা ছক আছে। এই বইটাও তার বাইরে নয়।
  • কামুক বৃদ্ধ - যে তরুণী মেয়েদেরকে সাথে নানা আদিরসাত্মক ঠাট্টা করবে। মেয়েরা আবার তাকে খুবই পছন্দ করবে।চেক
  • মাঝ বয়সী শঠ বাবা, শাশুড়ী  আথবা দাদী  - এরা বেশিরভাগ সময় পাগলের অভিনয় করে। এই চরিত্রটির প্রধান কাজ খিস্তি খেউর এবং নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করা। শেষদিকে এরা সাধারণত নিজের ভুল বুঝতে পেরে নানা মহৎ কাজ করে থাকে। চেক
  • অতিপ্রাকৃত ঘটনা বা সস্তা নাটকীয়তা  চেক
  • নারিকেল মানবঃ এরা বইয়ের প্রধান চরিত্র। নায়ক অথবা নায়িকা। এদের বাইরেটা ইস্পাত কঠিন কিন্তু ভিতরটা খুবই নরম। পাঠক মনে হয়  এ ধরনের চরিত্র খুব পছন্দ করে। চেক
এই বইয়ে যেটা সবচেয়ে বেশী চোখে লেগেছে তা হল এই একবিংশ শতকে একই শহরে বাস করা গল্পের প্রধান চরিত্রগুলোর যোগাযোগের মাধ্যম হল চিঠি। এদের কারো সেল ফোন নেই। হয়তো চিঠিতে লেখকের যে মুন্সীয়ানা ফুটে ওঠে, কথোপকথনে তা সম্ভব না।

তবে লেখকের সাফল্য হল এত কিছুর পরেও তিনি মানুষের ভালো দিকটাকে তুলে ধরেন। তাই দরিদ্র বণিকা মর্জিনা মুহুর্তেই শুভ্রকে ভাই পাতিয়ে ফেলতে পারে। চরের মানুষ শুভ্রর জন্য নিজের জীবন বাজি রাখতে পারে কিংবা সন্ত্রাসী টুনুও ভালো হয়ে যেতে চেষ্টা করে। যে কাজ গুলো ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষ পারে না। এই চরিত্রগুলো তা করে ফেলে অবলীলায়। তাই সব ছাপিয়ে হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস গুলো হয়ে উঠে মানুষের ইচ্ছা পূরণের গল্প।
শুভ্র গেছে বনেও এর ব্যাতিক্রম নয়।

প্রথম প্রকাশঃ সচলায়তন ০৪-১৬-১০

Comments

Popular posts from this blog

টোনা টুনির গল্প

এক দেশে ছিলো এক টোনা আর এক টুনি। এক ছুটিরদিন সকালে টোনা, টুনিকে ডাকিয়া কহিল -“টুনি ভাপা পিঠা খাওয়ার শখ হইতেছে।” শুনিয়া টুনি ফ্রিজ খুলিয়া দেখিল, কেবল শুকনো রুটি আর পনির পড়িয়া আছে। টুনি বলিল – -“ফ্রীজে কিছুই নাই। বাজার হইতে ভাপা পিঠা রাধিঁবার সরঞ্জাম লইয়া আস। - টোনা শুধায় “কি কি লাগিবে ফর্দ দাও।” টুনি পড়িল মহা চিন্তায়, ভাপা পিঠা কি উপায়ে রাধেঁ , কি কি লাগে সবই তো তার অজানা। ভাবিতে ভাবিতে ঘরের কোণায় যত্ন করিয়া রাখা দেশ বিদেশের পিঠা বইখানি টানিয়া লইলো। তাহা হইতে যাহা যাহা দরকার সব লিস্ট করিয়া টোনাকে দিয়া বলিল – “তাড়াতাড়ি এইসব লইয়া আস।” বিরস মুখে বাজারের থলি হাতে টোনা বাহির হইল। টুনি ভাবে, মায়ের কাছ থেকে ভাল উপায়ে ভাপা পিঠা রন্ধন প্রনালী শিখিয়া নেয়া দরকার। মাকে ফোন করিয়া ঘটনা জানাইতেই তিনি টোনার উপর যারপর নাই চটিয়া গিয়া কহিলেন- -“টোনা তাহার কন্যা কে পাহিয়াছে কি? ছুটির দিনেও রান্নাঘর থেকে ছুটি দিতেছে না।” অবস্থা বেশি সুবিধার না আঁচ করিয়া টুনি ফোন রাখিয়া দিয়া ভাবিল শ্বাশুড়িমাতার কাছ থেকেই না হয় শিখিয়া লওয়া যাক। ঘটনা শুনিয়া শ্বাশুড়িমাতা “টোনার দুর্ভাগ্যের জন্য যারপর নাই দুঃখ প্রকাশ করি...

হাড়ে হাড়ে চিনি তোমায়...

হাড়ে হাড়ে চিনি তোমায় কচু ভালোবাসো আমায়' আমার লগে কর অভিনয়... জানি তুমি, চক্ষু দু’টা বাইন্ধ্যা রাখস্‌ সামনের বাড়ির জানালায়।। ফাজিল মাইয্যার নাম কি জানি, শিবানী না কি সর্বানী, মাইয্যার চোখে মুখে জ্বলে রাশি রাশি শয়তানি। রাশি রাশি শয়তানি রে… ইশারাতে চলতাছে চলুক, লোকে বলতাসে বলুক। আমার সংসারে যদি আগুন জ্বলে তবে, রিপোর্ট করব চাচার থানায়, প্রেম কর বইয়া জেলখানায়। মনে রাইখো এই কথাটি, প্রেম কইরা করস বিয়া, তোমের ঘরে আইলাম আমি, সব কিছু ছাইরা দিয়া, সব কিছু ছাইরা দিয়া হায়!! সেই মনুমেন্টের নিচে বইয়া, ফুচুফুচু কথা শুনাইয়া, আও গ্রাম ঘাটের ধারে, প্রথম প্রেমের কবিতা পইড়া, আমারে পাগোল বানাইলেও, পরাণ হয় পাগোল, উঁকিঝুকি মাইরো না আর, ছিঃহ্‌!! এ সকল কি তোমার মানায়??

জেনে শুনে বিষ করেছি পান

জেনে শুনে বিষ করেছি পান আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান প্রাণেরও আশা ছেড়ে সপেঁছি প্রাণ যতই দেখি তারে ততই দহি আপনো মনো জ্বালা নিরবে সহি , তবু পারিনে দুরে যেতে, মরিতে আশে লহিবো বুক পেতে অননও বান। জেনে শুনে বিষ করেছি পান আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান । যতই হাসি দিয়ে দহনও করে ততই বাড়ে তৃষা প্রেমেরও তরে - প্রেমও অমৃত ধারা যতই যাচি ততই করে প্রাণে অশনি দ্বান। আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান প্রাণেরও আশা ছেড়ে সপেঁছি প্রাণ আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান । - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমি জেনে শুনে বিষ আজকে আমার আমেরিকা জীবনের চার বছর পূর্ণ হল। আমেরিকা বা বাংলাদেশ কোনটাই আমার কাছে বিষ নয় বরং গলার মাঝে আটকে থাকা বাষ্পের মত। এই বাষ্প কখনো আমেরিকা; আবার কখনো বাংলাদেশ। বড় অদ্ভূত এই টানা পোড়ন - ঠিক এই গানটার মত।