Skip to main content

খাপছাড়া -১

মানুষেরই মাঝে স্বর্গ নরক, মানুষেতে সূর আসূর
যতই ইতিহাস পড়ছি, মানুষের বর্বরতায় বিমূঢ় হয়ে যাচ্ছি। শুধু মাত্র বিশ্বাসের পার্থক্যের কারণে একে অন্যকে হত্যা করছে। খুব অবাক হয়ে দেখি - মানুষই একমাত্র প্রাণী যে তার নিজের স্পিসিসকে হত্যা করে। একটা বাঘ তো আরেকটা বাঘকে মেরে ফেলে না।পোল্যান্ডের এক গ্রামে হলোকাস্টের নৃশংসতার কাহিনী শুনে আমি ক্লাসেই কেদেঁ ফেলেছি।

সেই একই  কাহিনীরি পুনঃরাবৃত্তি হচ্ছে ডারফোর বা আফগানিস্তানে। কোথায় যেন তালেবান ট্রেনিং এর বর্ণনা পড়েছিলাম - তালেবানেরা ৬-৭ বছরের বাচ্চা ছেলেদের ,বাবা -মার কাছ থেকে আলাদা করে ফেলে। প্রথম দু'দিন খুব যত্ন করে। পরের দু'দিন কোন খাবার দেয় না । তারপর তাদেরকে একটা মুরগীর খামারে নিয়ে, বলা হয় যে সবচেয়ে বেশি মুরগী হত্যা করতে পারবে তাকে খাবার দেয়া হবে। ক্ষুধার তাড়নায় বাচ্চাগুলো মুরগী হত্যা করতে থাকে। এভাবে তাদের সংবেদনশীলতা শিশুকাল থেকেই নষ্ট করে দেয়া হয়,  একসময় তাদের কাছে হত্যা স্বাভাবিক মনে হয়।

ঠিক এভাবে না হলেও ,  পত্রিকা, রেডিও, টেলিভিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের শিশুদের সুকুমারবৃত্তি গুলো ধবংস করে ফেলা হচ্ছে। মানুষ হয়ে পড়ছে, ভীষণ অসহিষ্ণু। বাচ্চারা ছোটবেলা থেকেই দেখছে, মা -বাবা , বাসার সাহায্যকারী মেয়েটির  গায়ে হাত তুলছে। বড় হয়ে সেও ঠিক তাই করছে। রেডিও - টিভিতেই  দেখানো হচ্ছে সড়ক দূর্ঘটনা, লঞ্চডুবি, হত্যা, মারামারির বিভতস্য চিত্র।
বলছিনা যে এসব তথ্য প্রচার বন্ধ করতে হবে। কিন্তু শিশুরা যেন এগুলোতে অভ্যস্ত হয়ে না পড়ে সে ব্যবস্থা করতে হবে। বাবা-মা  সহ সমাজের সকলকে সতর্ক হতে হবে। সব চেয়ে ভালো হয় প্রোগ্রাম রেটিং ব্যবস্থা চালু করতে পারলে।

একদিকে যখন এভাবে মানবতা যখন লুন্ঠিত হচ্ছে, অন্যদিকে সেই মানুষই, দূরদেশের ভিন্ন বর্ণ, ধর্মের মানুষ গুলোর সাহায্যে এগিয়ে যাচ্ছে। হাইতির  ভুমিকম্প বা বংলাদেশের সাইক্লোনে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য  বৈদেশিক  ত্রাণ , আমাকে আবার মানুষকে বিশ্বাস করতে বাধ্য করে।

আমার ওয়েবসাইট
মার্কেটিং ক্লাসের প্রথম শিক্ষা -" নিঁখুত মোড়কে যেকোন কিছুই বিক্রয়যোগ্য"। আজকাল সব কিছুই পণ্য হয়ে গিয়েছে। মানুষ পর্যন্ত। এই চটকদার মোড়ক তৈরীর একটা ধাপ হল নিজের ওয়েব ঠিকানা  আর তাতে নিজের ঢাক পিটানো। নিজেকে একটা ব্র্যান্ড হিসাবে দাঁড় করাতে হবে। নয়তো এ বাজারে চাকরি মিলবে না। আর ক'দিন পরেই ছাত্র জীবন শেষ,  ওয়ার্কফোর্সে নিজের স্থান করে নিতে তাই এ আয়োজন।
আমি নিজের লোগো হিসাবে কাগজের নৌকা বেছে নিলাম।রক্তে সমুদ্র আছে বলেই হয়তো। বাবার কোম্পানির লোগো অবশ্য নোঙ্গোর। এখানেই বোধ হয় দুই প্রযন্মের পার্থক্য। এক প্রযন্ম খুঁটি গেড়ে বসতে চায়, আর পরবর্তী প্রযন্ম চায় ভেসে বেড়াতে।
অবশ্য বন্ধুদের ধরণা শেখ হাসিনার প্রতি অত্যাধিক প্রীতিই আমার এই লোগোর কারণ।আমার ওয়াব ঠিকানা-
http://atlas.itdsdom1.unt.edu/noor/

B.S. A (বাংলাদেশ স্টুডেন্ট এ্যসোসিয়েশন)  এর মৃত্যু
আমি যখন  B.S.A  গড়েছিলাম, আমার উদ্দেশ্য ছিলো দু'টি।
  •    বাংলাদেশের দুর্গত মানুষকে সাহায্য করা । যেটা আমরা মোটামুটি সফল। সাইক্লোন সিডরে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য আমারা বেশ কিছু টাকা  দান করতে পেরেছি।
  •  বাংলাদেশ নাইট আয়োজন করা। এবং সেই সাথে নিজেরা মজা করা। সেই উদ্দেশ্য ভীষণ ভাবে সফল। আমাদের অনুষ্ঠানটি ড্যালাসের বাংলাদেশী কম্যুনিটির গত দশকের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অনুষ্ঠানের স্বীকৃতি পেয়েছে প্রায় সবার কাছ থেকেই।
মনে হয় না - এই সংগঠন থেকে আর কিছু পাবার বা একে দেবার মত আমার  আর কিছু আছে। আমার উত্তরসুরিরা যদি একে টেনে নিয়ে যেতে চায়,  আমি অবশ্যই সর্বোচ্চ সাহায্য করব। কিন্তু আমার  পক্ষে এই মুহুর্তে এত সময় দেয়া সম্ভব না।  যদিও  নিজের হাতে গড়া সংগঠনের মৃত্যু দেখা খুবই কষ্টের।

Comments

Popular posts from this blog

টোনা টুনির গল্প

এক দেশে ছিলো এক টোনা আর এক টুনি। এক ছুটিরদিন সকালে টোনা, টুনিকে ডাকিয়া কহিল -“টুনি ভাপা পিঠা খাওয়ার শখ হইতেছে।” শুনিয়া টুনি ফ্রিজ খুলিয়া দেখিল, কেবল শুকনো রুটি আর পনির পড়িয়া আছে। টুনি বলিল – -“ফ্রীজে কিছুই নাই। বাজার হইতে ভাপা পিঠা রাধিঁবার সরঞ্জাম লইয়া আস। - টোনা শুধায় “কি কি লাগিবে ফর্দ দাও।” টুনি পড়িল মহা চিন্তায়, ভাপা পিঠা কি উপায়ে রাধেঁ , কি কি লাগে সবই তো তার অজানা। ভাবিতে ভাবিতে ঘরের কোণায় যত্ন করিয়া রাখা দেশ বিদেশের পিঠা বইখানি টানিয়া লইলো। তাহা হইতে যাহা যাহা দরকার সব লিস্ট করিয়া টোনাকে দিয়া বলিল – “তাড়াতাড়ি এইসব লইয়া আস।” বিরস মুখে বাজারের থলি হাতে টোনা বাহির হইল। টুনি ভাবে, মায়ের কাছ থেকে ভাল উপায়ে ভাপা পিঠা রন্ধন প্রনালী শিখিয়া নেয়া দরকার। মাকে ফোন করিয়া ঘটনা জানাইতেই তিনি টোনার উপর যারপর নাই চটিয়া গিয়া কহিলেন- -“টোনা তাহার কন্যা কে পাহিয়াছে কি? ছুটির দিনেও রান্নাঘর থেকে ছুটি দিতেছে না।” অবস্থা বেশি সুবিধার না আঁচ করিয়া টুনি ফোন রাখিয়া দিয়া ভাবিল শ্বাশুড়িমাতার কাছ থেকেই না হয় শিখিয়া লওয়া যাক। ঘটনা শুনিয়া শ্বাশুড়িমাতা “টোনার দুর্ভাগ্যের জন্য যারপর নাই দুঃখ প্রকাশ করি

হাড়ে হাড়ে চিনি তোমায়...

হাড়ে হাড়ে চিনি তোমায় কচু ভালোবাসো আমায়' আমার লগে কর অভিনয়... জানি তুমি, চক্ষু দু’টা বাইন্ধ্যা রাখস্‌ সামনের বাড়ির জানালায়।। ফাজিল মাইয্যার নাম কি জানি, শিবানী না কি সর্বানী, মাইয্যার চোখে মুখে জ্বলে রাশি রাশি শয়তানি। রাশি রাশি শয়তানি রে… ইশারাতে চলতাছে চলুক, লোকে বলতাসে বলুক। আমার সংসারে যদি আগুন জ্বলে তবে, রিপোর্ট করব চাচার থানায়, প্রেম কর বইয়া জেলখানায়। মনে রাইখো এই কথাটি, প্রেম কইরা করস বিয়া, তোমের ঘরে আইলাম আমি, সব কিছু ছাইরা দিয়া, সব কিছু ছাইরা দিয়া হায়!! সেই মনুমেন্টের নিচে বইয়া, ফুচুফুচু কথা শুনাইয়া, আও গ্রাম ঘাটের ধারে, প্রথম প্রেমের কবিতা পইড়া, আমারে পাগোল বানাইলেও, পরাণ হয় পাগোল, উঁকিঝুকি মাইরো না আর, ছিঃহ্‌!! এ সকল কি তোমার মানায়??

ভাবনাগুলো এলোমেলো

সবকিছু বড্ড বেশী ধোঁয়াশা লাগে আজকাল।  পৃথিবী নতুন লাগছে। নাকি আমিই হয়তো বদলে গিয়েছি। কিংবা আমি না সময়টাই বদলে গিয়েছে। গতকাল একটা ফর্ম পূরণ করতে গিয়ে খেয়াল করলাম বয়সের ঘরটা্র  পরিবর্তন হয়েছে।  বদলে গিয়েছে আরো অনেক কিছুই। সবাই সেমেষ্টার  ফাইনাল পরীক্ষার জন্য পড়ছে। আমার স্কুল নেই, বই নেই, পরীক্ষা নেই। কখনো ভাবিনি পরীক্ষা নেই বলে অফসোস করবো !!! হয়তো আমিই বদলে গিয়েছি অনেক বেশি। জীবনে এসে পড়েছে অনেক দায়িত্ব। অচেনা কিছু মানুষ নতুন সম্পর্কের টানে আপন হয়ে উঠেছে; আবার আপন কিছু মানুষ অদ্ভূত নির্লিপ্ততায় দূরে সরে গেছে।  স্বতঃস্ফূর্ত জীবনের মাঝে ঢুকে গিয়েছে  হিসাব নিকেশ, অনেক প্রত্যাশা আর  হতাশা। আর ঠিক এক সপ্তাহ পরে চলে যাচ্ছি নতুন একটা শহরে।  অনিশ্চিত জীবনে।  আবার কখনো হয়তো ফিরে আসবো এই চেনা শহরে, কিন্তু তখন কী আজকের চেনা মানুষ গুলো এমনই থাকবে?? সব পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করতে গিয়ে যেন তলিয়ে যাচ্ছি।