Skip to main content

বৃষ্টি ও রোমান্টিকতার এদেশ, সেদেশ, স্বদেশ


সকাল থেকেই আজ আকাশটা মেঘলা। একটু পরেই শুরু হল ঝুম বৃষ্টি। ভীষন মন খারাপ করা পরিবেশ। জানালার বাইরে তাকালেই ...হেমন্তের হলুদ হয়ে যাওয়া পাতাগুলো ভিজে খসে পড়ছে। একটা ব্লুজে পাখি বৃষ্টি থেকে বাঁচতে গাড়ির নীচে লুকাল। হায়রে বোকা পাখি তুই কি জানিস্ না, যে গাড়িটা যেকোন সময় তোকে চাপা দিয়ে চলে যাবে। কাঠবিড়ালী গুলো যেন কোথায় লুকিয়েছে, একটাকেও দেখা যাচ্ছে না।

এমন দিনে ইচ্ছা করে ভুনা খিচুরী আর ঝাল গরুর মাংস খেয়ে; কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুম দিতে... ঘুম থেকে উঠে চানাচুর আর চা খেতে খেতে টিনের চালে টাপুর টুপুর বৃষ্টি পড়া দেখতে। ইস্সসস জীবনটা কতই না সুখের হতে পারত!!

একটু পরে ক্লাস। প্রজেক্ট সাবমিট করব একটা, তারপর আছে কুইজ। কিছুই পড়া হয়নি। বাইরে ঠান্ডা বাড়ছে। রাত ১০ টার আগে বাড়ি ফেরা হবে না ; ভালই বুঝতে পারছি।একগাদা গরম কাপড় গায়ে চাপিয়ে স্কুলের দিকে রওনা দিলাম। ধুর! রেইনবুট দরকার একটা; মলে যাওয়ার সময়ই হচ্ছে না।

ঢাকায় বৃষ্টিতে ক্লাস করাটাও যেন অন্যরকম মজা। চারিদিকে জলে থৈ থৈ। এর মাঝে বীরবিক্রমে রিকশা চলছে। বড় গাড়ি গুলো যাওয়ার সময় পানি ছিটালে, রিকশাওয়ালা ভাইয়ের মুখে গালি... পিছনে প্লাস্টিকের চরম ময়লা একটা পর্দা টেনে বসে থাকা... মাঝে মাঝে পর্দার ফাঁকে উকিঁঝুকি দিয়ে দেখা ... কতটা পথ বাকী?? ক্লাস শেষে, কিংবা ক্লাস না করেই দল বেঁধে কলাভবনে খিচুরি খেতে যাওয়া আর সাথে ম্যারাথন আড্ডা।
ক্লাস করতে একটুও ভাল লাগছে না। ক্লাসরুমের জানালাগুলো সব কালো বাইরে দেখা যায়না। বের হয়ে দেখি এই বৃষ্টিতেও হুভার দিয়ে পাতা পরিষ্কার করছে!!!
একটা কফি খাওয়া দরকার। এখন কফি খেলে আবার রাতে ঘুম হবে না... আরো একটা ক্লাস বাকি এখনো।

আচ্ছা, আজকে ক্লাসটা না করলে কি হয়?? হোক না আজ নিয়ম ভাঙ্গা একটা দিন।

Comments

  1. নিয়ম ভাঙার দিন কি আর আছে? পুঁজিবাদী সমাজে লে-অফ ও মেনে নিতে হবে।

    গত কয়েকদিন ধরে একটি ব্যাপার মাথায় ঘুরছে। আমার আড়াই বছরের চাকরি জীবনে একদিনও সিক-লিভ নেইনি। প্রাপ্য সব ছুটি ঠিকই নিয়েছি, কিন্তু আগে থেকে জানিয়ে। হয়ত কোন এক সকালে অফিস যেতে ইচ্ছে হচ্ছে না, ফোন করে বলে দিলাম "আজকে আসতে পারব না" - এরকম একদিনও হয়নি!!!

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

টোনা টুনির গল্প

এক দেশে ছিলো এক টোনা আর এক টুনি। এক ছুটিরদিন সকালে টোনা, টুনিকে ডাকিয়া কহিল -“টুনি ভাপা পিঠা খাওয়ার শখ হইতেছে।” শুনিয়া টুনি ফ্রিজ খুলিয়া দেখিল, কেবল শুকনো রুটি আর পনির পড়িয়া আছে। টুনি বলিল – -“ফ্রীজে কিছুই নাই। বাজার হইতে ভাপা পিঠা রাধিঁবার সরঞ্জাম লইয়া আস। - টোনা শুধায় “কি কি লাগিবে ফর্দ দাও।” টুনি পড়িল মহা চিন্তায়, ভাপা পিঠা কি উপায়ে রাধেঁ , কি কি লাগে সবই তো তার অজানা। ভাবিতে ভাবিতে ঘরের কোণায় যত্ন করিয়া রাখা দেশ বিদেশের পিঠা বইখানি টানিয়া লইলো। তাহা হইতে যাহা যাহা দরকার সব লিস্ট করিয়া টোনাকে দিয়া বলিল – “তাড়াতাড়ি এইসব লইয়া আস।” বিরস মুখে বাজারের থলি হাতে টোনা বাহির হইল। টুনি ভাবে, মায়ের কাছ থেকে ভাল উপায়ে ভাপা পিঠা রন্ধন প্রনালী শিখিয়া নেয়া দরকার। মাকে ফোন করিয়া ঘটনা জানাইতেই তিনি টোনার উপর যারপর নাই চটিয়া গিয়া কহিলেন- -“টোনা তাহার কন্যা কে পাহিয়াছে কি? ছুটির দিনেও রান্নাঘর থেকে ছুটি দিতেছে না।” অবস্থা বেশি সুবিধার না আঁচ করিয়া টুনি ফোন রাখিয়া দিয়া ভাবিল শ্বাশুড়িমাতার কাছ থেকেই না হয় শিখিয়া লওয়া যাক। ঘটনা শুনিয়া শ্বাশুড়িমাতা “টোনার দুর্ভাগ্যের জন্য যারপর নাই দুঃখ প্রকাশ করি...

হাড়ে হাড়ে চিনি তোমায়...

হাড়ে হাড়ে চিনি তোমায় কচু ভালোবাসো আমায়' আমার লগে কর অভিনয়... জানি তুমি, চক্ষু দু’টা বাইন্ধ্যা রাখস্‌ সামনের বাড়ির জানালায়।। ফাজিল মাইয্যার নাম কি জানি, শিবানী না কি সর্বানী, মাইয্যার চোখে মুখে জ্বলে রাশি রাশি শয়তানি। রাশি রাশি শয়তানি রে… ইশারাতে চলতাছে চলুক, লোকে বলতাসে বলুক। আমার সংসারে যদি আগুন জ্বলে তবে, রিপোর্ট করব চাচার থানায়, প্রেম কর বইয়া জেলখানায়। মনে রাইখো এই কথাটি, প্রেম কইরা করস বিয়া, তোমের ঘরে আইলাম আমি, সব কিছু ছাইরা দিয়া, সব কিছু ছাইরা দিয়া হায়!! সেই মনুমেন্টের নিচে বইয়া, ফুচুফুচু কথা শুনাইয়া, আও গ্রাম ঘাটের ধারে, প্রথম প্রেমের কবিতা পইড়া, আমারে পাগোল বানাইলেও, পরাণ হয় পাগোল, উঁকিঝুকি মাইরো না আর, ছিঃহ্‌!! এ সকল কি তোমার মানায়??

জেনে শুনে বিষ করেছি পান

জেনে শুনে বিষ করেছি পান আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান প্রাণেরও আশা ছেড়ে সপেঁছি প্রাণ যতই দেখি তারে ততই দহি আপনো মনো জ্বালা নিরবে সহি , তবু পারিনে দুরে যেতে, মরিতে আশে লহিবো বুক পেতে অননও বান। জেনে শুনে বিষ করেছি পান আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান । যতই হাসি দিয়ে দহনও করে ততই বাড়ে তৃষা প্রেমেরও তরে - প্রেমও অমৃত ধারা যতই যাচি ততই করে প্রাণে অশনি দ্বান। আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান প্রাণেরও আশা ছেড়ে সপেঁছি প্রাণ আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান । - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমি জেনে শুনে বিষ আজকে আমার আমেরিকা জীবনের চার বছর পূর্ণ হল। আমেরিকা বা বাংলাদেশ কোনটাই আমার কাছে বিষ নয় বরং গলার মাঝে আটকে থাকা বাষ্পের মত। এই বাষ্প কখনো আমেরিকা; আবার কখনো বাংলাদেশ। বড় অদ্ভূত এই টানা পোড়ন - ঠিক এই গানটার মত।